ঢাকা , রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
এস এইচ কে এস সি শিক্ষার্থীদের ‘হ্যাপি ওরিয়েন্টেশন’ অনুষ্ঠিত করদাতার ওপর অস্বাভাবিক চাপ সৃষ্টির শঙ্কা নারায়ণগঞ্জে গুলি করে কুপিয়ে ছিনতাই ভিডিও ভাইরাল গণতন্ত্রের উত্তরণের জন্য নির্বাচন ছাড়া কোনো পথ নেই- দুদু কানাডা প্রবাসীদের জন্য ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম চালু অর্থনীতিতে অশনি সংকেত শত শত কারখানা বন্ধ এপিবিএন অধিনায়কের প্রত্যাহারচাওয়া নিয়ে তোলপাড় নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন সুশীলা কার্কি শাহজাহানপুরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ২ গণপরিবহনে সংরক্ষিত হচ্ছে না যাত্রীদের অধিকার জাবি শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের দাফন সম্পন্ন জাকসুর ফল প্রকাশে বিলম্ব ক্ষোভ বাড়ছে শিক্ষার্থীদের ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখের মধ্যেই নির্বাচন হবে-প্রেস সচিব বিচারপতি ড. আখতারুজ্জামানের পদত্যাগ গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্রপতি সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি তিনজন কারাগারে সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকদের প্রবেশ পদ ৯ম গ্রেডে উন্নীতকরণের দাবি রোড বেল্ট ইনিশিয়েটিভ এক্সিবিশনে যৌথ সক্ষমতা তুলে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে-বাণিজ্য উপদেষ্টা স্বস্তি নেই সবজির দামে নিত্যপণ্যের দাম চড়া রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ বিশ্বকাপের টিকেট না পাওয়ায় বরখাস্ত হলো ভেনেজুয়েলা ও পেরুর কোচ

যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে সীমিত রাখার প্রস্তাব বাংলাদেশের

  • আপলোড সময় : ২৮-০৬-২০২৫ ০৪:২৫:৪৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০৬-২০২৫ ০৪:২৫:৪৮ অপরাহ্ন
যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত শুল্ক সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে সীমিত রাখার প্রস্তাব বাংলাদেশের
বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অতিরিক্ত ৩৭ শতাংশ রেসিপ্রোকাল (পাল্টা) শুল্ক স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে চূড়ান্ত বাণিজ্য চুক্তির লক্ষ্যে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার। আগামী ৯ জুলাই এই শুল্কের স্থগিতাদেশ শেষ হতে যাচ্ছে। এর আগে চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসছে অন্তর্বর্তী সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ইউএসটিআর (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি দফতর) কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই-রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. খলিলুর রহমান। এ বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ন্যায্য একটি বাণিজ্য চুক্তির আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ সর্বোচ্চ ১০ শতাংশে সীমিত রাখার প্রস্তাব তুলে ধরে। ২৯ জুন এই বিষয়ে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে, ১২ জুন দুই দেশের মধ্যে একটি ‘নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্ট’ স্বাক্ষরিত হয়, যার আওতায় প্রস্তাবিত রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তির খসড়া বাংলাদেশের কাছে পাঠায় যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ তার জবাব পাঠিয়েছে ২৫ জুন, যেখানে একতরফাভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ আইন অনুসরণ না করে যৌথভাবে সুবিধাজনক শর্তে চুক্তি চূড়ান্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে এবং আলোচনায় ইতিবাচক সাড়া পেতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই আমদানি বৃদ্ধির বেশ কয়েকটি উদ্যোগ নিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ইউক্রেন থেকে গম আমদানির সিদ্ধান্ত বাতিল করে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম আমদানি শুরু হয়েছে। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং কোম্পানি থেকে উড়োজাহাজ কেনার প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া, জ্বালানি বিভাগ যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি থেকে এলএনজি আমদানিতে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত স্পট মার্কেট থেকে যেসব এলএনজি কেনা হয়েছে, তার বড় অংশই এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ স্থগিতাদেশের মেয়াদ ঘনিয়ে আসায় দেশের প্রধান রফতানি খাত, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্টদের মধ্যে উদ্বেগ তীব্র হচ্ছে। বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান বাবু জানান, এ নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তারা। রাষ্ট্রদূত তাদের আরও ‘সিরিয়াস’ হয়ে আলোচনায় অংশ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, নন-ডিসক্লোজার অ্যাগ্রিমেন্টের বিষয়বস্তু আমাদের জানা নেই, জানার চেষ্টা করেও সরকারকে বিব্রত করতে চাই না। তবে আমাদের একমাত্র দাবি— প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় যেন আমাদের ওপর শুল্ক বেশি না হয়। তিনি আরও বলেন, প্রয়োজন হলে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও ৯০ দিনের শুল্ক স্থগিত রাখার অনুরোধ জানানো উচিত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দাবি, ভারত, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়ার মতো প্রতিযোগী দেশগুলো এখনও আলোচনার প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশ একটি নন-ডিসক্লোজার চুক্তি স্বাক্ষরের পাশাপাশি রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ চুক্তির খসড়া পর্যায়ে পৌঁছেছে। আলোচনার একাধিক পর্বে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে আমদানি বাড়ানোর পরিকল্পনা, শুল্কহার সম্পর্কিত ভুল তথ্য সংশোধন এবং বাংলাদেশি রফতানিপণ্যের সুবিধা চেয়ে বিস্তারিত প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, বাংলাদেশ তাদের পণ্যে গড়ে ৭৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। কিন্তু বাংলাদেশ সেই হিসাবকে ভিত্তিহীন উল্লেখ করে প্রকৃত শুল্কহারের চিত্র তুলে ধরেছে। পাশাপাশি, আগামী অর্থবছরের বাজেটে যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর শুল্ক হ্রাসের কিছু পদক্ষেপও জানানো হয়েছে। বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি শুল্ক নিয়ে সরকার সর্বোচ্চ তৎপরতা চালাচ্ছে। ইউএসটিআরের প্রতিটি চিঠির জবাব যথাসময়ে দেওয়া হচ্ছে। ২৯ জুন চূড়ান্ত আলোচনার পরই নির্ধারিত হবে— চুক্তিটি কখন ও কীভাবে স্বাক্ষরিত হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৮৩৬ কোটি ডলারের পণ্য রফতানি করেছে, অপরদিকে আমদানি করেছে ২২১ কোটি ডলারের পণ্য। এই অসম বাণিজ্য ঘাটতির মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপে বাংলাদেশ চাপের মুখে পড়েছে। উল্লেখ্য, চুক্তি স্বাক্ষরের সময়সীমা ঘনিয়ে এলেও সরকারের পক্ষ থেকে আলোচনার গতি ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ আশাব্যঞ্জক বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে রফতানিকারকদের দাবি— চূড়ান্ত চুক্তিতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা যেন হার না মানে।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স